বিটকয়েন - নতুন ধারা

বিটকয়েন হচ্ছে এক ধরনের সাংকেতিক মুদ্রা (Virtual Currency) যেটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রোটকলের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়ে থাকে। এটি লেনদেন নিয়ন্ত্রণ এর জন্য কোন প্রতিষ্ঠান নেই। এটি সম্পূর্ণ একটি ওপেনসোর্স প্রোজেক্ট। সাতোশি নাকামোতো নামে একজন ভদ্রলোক ২০০৮ সালে এই মুদ্রা আবিস্কার করেন। এই মুদ্রাকে তিনি পিয়ার-টু-পিয়ার নামে অবিহিত করেন। বিটকয়েন মাইনার নামে এক ধরনের সার্ভারে এর যাবতীয় লেনদেন সংরক্ষিত থাকে। যেকোন কম্পিউটার থেকে এর লেনদেন করা হলে এর কেন্দ্রীয় সার্ভারে তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে হালনাগাদ (Automatic Update) হয়ে থাকে। বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি পেপাল, পাইজা, পারফেক্টমানি এর মত পেমেন্ট প্রসেসর হিসেবে ব্যাবহিত হচ্ছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট, এমনকি অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানও বিটকয়েন এ পেমেন্ট করছে। বিটকয়েন মাইনার এর মাধ্যমে বিটকয়েন উৎপন্ন করা যায়। প্রয়োজনীয় হার্ডওয়ার এবং সফটওয়্যার এর মাধ্যমে যে কেউ বিটকয়েন উৎপাদন করতে পারে। উৎপাদিত বিটকয়েন গ্রাহকের ডিজিটাল ই-ওয়ালেট (অ্যাকাউন্ট) এ সংরক্ষিত থাকে। বিটকয়েন মাইনিং এর পদ্ধতিটি যথেষ্ট জটিল। কিছু গানিতিক সমস্যা সমাধান করতে হয়, যেগুলো দিন দিন আরও কঠিন হয়ে আসছে। এর দামও অনেক বেশি উঠানামা করে। বর্তমানে (২৬-৬-২০১৪) প্রতিটি বিটকয়েন এর মূল্য ৫৯৯.৭৬ ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৪৮০০০ টাকা। পূর্বে একবার এর মূল্য ১০০০ ডলারও অতিক্রম করেছিল। বিটকয়েন এর ক্ষুদ্র এককঃ 1 MBTC = 1000000 BTC 1 uBTC = 0.00000 BTC 1 mBTC = 0.001 BTC 1 satoshi = 0.00000001 BTC
বিটকয়েন অনেকটা প্রাইজবন্ডের মত একটা জিনিস, যা কোন সত্যি মুদ্রা না কিন্তু সত্যি মুদ্রার সাথে লেনদেন করা যাবে সরাসরি। বিটকয়েন সরাসরি আমেরিকান ডলার দিয়ে কেনা যাবে এবং চাইলে এটাকে আমেরিকান ডলারে পরিণত করে যাবে। প্রাইজবন্ডের সাথে বিটকয়েনের কিছু পার্থক্য আছে, বিটকয়েন পুরোটাই ইন্টারনেটে, এটার বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই প্রাইজবন্ডের মত। বিটকয়েনর দাম উঠানামা করে ঠিক শেয়ারবাজারের মত - এবং এইভাবে বিটকয়েন থেকে লাভ করা যায়। যেমন আজকে আপনি/তুমি ৫০০ ডলারে একটা বিট কয়েন কিনলে, এক মাস পর বিটকয়েনের দাম বেড়ে ৬০০ ডলার হল। তখন তোমার বিটকয়েন বিক্রি করে দিলে, তোমার ১০০ ডলার লাভ হল। অবশ্যই পুরো পদ্ধতি এত সহজ না। অনেকটা শেয়ার বাজারের মত, এটার পিছনে লেগে থাকতে হবে।
Image result for বিটকয়েন

বিটকয়েন আদান প্রদান

মনেকরুন আপনি কোন পার্কে গেলেন সকালে হাটার জন্য। তো সেখানে গিয়ে দেখছেন একটি অ্যাপেল ওয়ালা অ্যাপেল বিক্রি করার জন্য বসে আছে এবং আপনি একটি অ্যাপেল কিনতে চান। এখন আপনি ওনাকে টাকা দিয়ে দিলেন আর বিনিময়ে একটি অ্যাপেল কিনে ফেললেন। এখন আপনার হাতে অ্যাপেলটি আসলো কিনা তা নিয়ে কিন্তু আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। কেনোনা আপনি অ্যাপেলটি ফিজিক্যালি দেখতে পাচ্ছেন এবং হাত দিয়ে ছুঁতে পারছেন। তাই আপনাকে অন্য কোন ব্যাক্তির প্রয়োজন পড়বে না এটি চেক করানোর জন্য। এই অ্যাপেলটি সম্পূর্ণ আপনার হয়ে যাবে এবং আপনি চাইলে তা যে কাওকে দিয়েও দিতে পারেন। আপনি এই অ্যাপেলটি আপনার বন্ধুকে দিতে পারেন ,আপনার বন্ধু সেটি আরেকজনকে দিতে পারে আর এভাবেই এই ক্রম বজায় থাকতে পারে।
এখন আপনি যদি কাওকে কোন নোট বা কিছু টাকা পাঠাতে চান তবে সেই নোটটি হলো কোন ফিজিক্যাল মুদ্রা, যা একবার কাওকে দিয়ে দিলে আর আপনার কাছে থাকবে না। অথবা আপনি যদি ব্যাংকের মাধ্যমে কাওকে টাকা পাঠাতে চান, তবে আপনাকে কিছু ফী দিতে হবে কিছু কাগজপত্র স্বাক্ষর করতে হবে। এতে আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে আরেকজনের অ্যাকাউন্টে টাকা যুক্ত করা হবে এবং সেই টাকা পরে একটি প্রপার চ্যানেলের মাধ্যমে সেই ব্যক্তিটির কাছে ফিজিক্যালি পৌঁছে যাবে। এখানে আপনাকে অবশ্যই ভেরিফাই করা হবে যে, আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা আছে কিনা এবং আপনি কোন একটি নোটকে শুধু একবারই খরচ বা কাওকে দিয়ে দিতে পারবেন।
কিন্তু বিটকয়েন পাঠানোর সময় ব্যাপারটা একটু আলাদা। আমি যদি আপনাকে কিছু মুদ্রা পাঠাতে চাই তবে হয়তো আমি আমার ডিভাইজ থেকে সেটি আপনার অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিলাম। কিন্তু এই ট্রানজেকশন কে ভেরিফাই করে দেবে? মানে আমি যে আপনাকে কিছু মুদ্রা পাঠালাম, আবার সেটা যে আমার কাছে এখনো জমা নেই তার কি নিশ্চয়তা?
এই সকল গণ্ডগোল ঠিক করার জন্য প্রত্যেকটি বিটকয়েনের অংশের সাথে গাণিতিক সমস্যা জুড়ে দেওয়া হয় এবং প্রত্যেকটি কয়েনের সাথে একটি গাণিতিক নাম্বার লাগিয়ে দেওয়া হয় একে ট্র্যাক করার জন্য। এভাবে বোঝা যায় যে কোন নাম্বারের কয়েন কখন কার কাছ থেকে কোথাই গেলো। এখন গোটা দুনিয়া জুড়ে প্রতিদিন অগুনতি কয়েন আদান প্রদান করা হয়ে থাকে তো এই ট্রানজেকশন গুলো সফল কে করিয়ে থাকে?

বিটকয়েনের সুবিধা

আপনি যখন যেভাবে ইচ্ছা যে কাওকে যেকোনো পরিমানের বিটকয়েন পাঠাতে পারবেন, এতে কোন রুল অনুসরন করার প্রয়োজন পড়বেনা। তাছাড়া সকল কয়েন গাণিতিক সমস্যার সাথে জুড়ে থাকে, ফলে প্রত্যেকটি ট্রানজেকশন করার সময় হিসেব থাকে, আপনি কোথাই কখন কতো কয়েন সেন্ড করলেন বা রিসিভ করলেন। আপনার কয়েন কেউ কখনোই খরচ করতে পারবে না এবং আপনিও কারো কয়েন খরচ করতে পারবেন না।
যার বিটকয়েন নেই সেও কোন কয়েন খরচ করতে পারবে না। এবং এগুলো একটি প্রপার সিস্টেম দ্বারা মানে কম্পিউটার সিস্টেম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার জন্য কখনোই কেউ একাধিকবার একই বিটকয়েন খরচ করতে পারবে না।

বিটকয়েনের অসুবিধা

সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বিটকয়েন কোন স্থিতিশীল মূল্যের মুদ্রা নয়—কেনোনা এটি নিয়ন্ত্রন করার জন্য কোন অথোরিটি থাকেনা। তাই এর মূল্য অনেক বেশি উঠানামা করতে পারে। একটি ১০০ টাকার নোট যেমন সময় ১০০ টাকাই থাকে কিন্তু ১ বিটকয়েনের মান সর্বদা এক থাকে না। তাই হতে পারে অনেক সময় আপনাকে অনেক লস স্বীকার করতে হতে পারে।
আপনি চাইলে বিটকয়েন থেকে যেকোনো পরিমানের অংশ খরচ করতে পারেন, এমন নয় যে আপনাকে ১ বিটকয়েনই খরচ করতে হবে। আপনি চাইলে ০.০০০১ বিটকয়েনও খরচ করতে পারেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এটি অনেক জায়গায় গ্রহন যোগ্য নয়। আপনি অনেক ওয়েবসাইটে একে ব্যবহার করতে পারবেন না। সব বিক্রেতা এটি গ্রহন করে থাকেন না। এতে আপনি ইচ্ছা মতো খরচ করতে পারবেন না। এর মানে অনেক জায়গায় আপনার কাছে বিটকয়েন থেকেও কিছু না থাকার বরাবর। সত্যি কথা বলতে এটি সতিই এক ধরনের ঝুঁকি, ফলে আপনি দ্বিধাই পড়ে যেতে পারেন যে, আপনার বিটকয়েনের উপর ইনভেস্ট করা ঠিক হবে কিনা।
যেহেতু এই মুদ্রা শুধু মাত্র ইলেক্ট্রোনিক্যালি জমা থাকে, তাই আপনার কম্পিউটার বা কম্পিউটিং ডিভাইজ যদি ক্র্যাশ হয়ে যায় কিংবা আপনি যদি অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড ভুলে যান তবে, আপনার সকল কয়েন গায়েব হয়ে যাবে। এবং আপনি কখনোই এই কয়েন গুলো রিকভার করতে পারবেন না।
#অনেক গুলো ব্লগ ঘেঁটে কপি করেছি । ।



1 comment:

  1. Why casinos are rigged - Hertzaman - The Herald
    In the UK, casino 1xbet login games are nba매니아 rigged and there is evidence of https://vannienailor4166blog.blogspot.com/ fraud, 바카라 사이트 crime or disorder or an individual's involvement. There are herzamanindir.com/ also many

    ReplyDelete

বিটকয়েন - নতুন ধারা

বিটকয়েন হচ্ছে এক ধরনের সাংকেতিক মুদ্রা (Virtual Currency) যেটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রোটকলের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়ে থাকে। এটি লেনদেন নিয়ন্ত্রণ...

Theme images by enjoynz. Powered by Blogger.